Skip to main content

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং






বর্তমান সময়ে সফটওয়্যার তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত এবং  বৈপ্লবিক একটি ধারণা অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং।
আধুনিক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের ব্যবহার অনেক। সেজন্য অ্যাপ ডেভেলপিংয়ে নাম লেখাতে চাইলে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং জানতেই হবে।

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং বুঝতে গেলে,
জানতে হবে অবজেক্ট কি।
অবজেক্ট আমাদের বাস্তবজীবনের যেকোন বস্তু, যার কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারটা একটা অবজেক্ট যার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, বসে আছেন যে খাট বা চেয়ারে সেটি একটি অবজেক্ট যার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আপনি নিজেও একজন অবজেক্ট, অন্য মানুষের সাথে আপনার কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্যে অবশ্য কিছু মিল আছে।
সুতরাং, আমাদের চারপাশে থাকা সকল বস্তুই আসলে একেকটি অবজেক্ট।
এখন কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভাষায় অবজেক্টকে সংজ্ঞায়িত করতে গেলে বিভিন্ন শাখা থেকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা বের হয়ে আসবে। তবে সবগুলো থেকেই সাধারণ যে ধারণা আসে তা হলো,
অবজেক্ট হচ্ছে এমন এক এন্টিটি যা রিয়েল লাইফ অবজেক্টের প্রতিনিধিত্ব করে, 
যে এন্টিটি সেটের প্রতিটি এন্টিটির অবস্থা আলাদা হলেও কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য একই থাকবে।  

এন্টিটি বলতে কোন স্বাধীন অস্তিত্বকে বুঝায়। অর্থাৎ যাকে আমরা এন্টিটি বলব, সে অবশ্যই কাল্পনিক কোন কিছু না।

এখন অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড বলতে কি বুঝব?

কোন অবজেক্টকে ঘিরে তাঁর অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য দিয়ে বর্ণনা করা গেলে তাঁকে অবজেক্ট অরিয়েন্টেশন বলা যায়।

আপনি একজন অবজেক্ট, আপনার বাবা আরেকজন অবজেক্ট। আপনার ও আপনার বাবার নাম আছে কিন্তু আপনার বাবার নাম ও আপনার নাম আলাদা। দুজনের বয়স আলাদা, মোবাইল নাম্বারটাও আলাদা। দুজনেই ভালবাসেন গান শুনতে, কিন্তু আপনার বাবা শোনেন ক্লাসিক রক, আপনি শোনেন হেভি মেটাল।
যেহেতু আপনাদের বৈশিষ্ট্য এক অর্থাৎ আপনারা দুজনই আলাদা পারসন যাদের একইরকম কমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে,
আমি আপনাদের ব্যাখ্যা করতে একটা ক্লাস বা+ এন্টিটি সেটে ফেললাম দুজনকে, নাম দিলাম Person। অর্থাৎ আমি যদি Person ক্লাসে আর কাউকে ফেলি, বুঝতে হবে তাঁদের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলোই আছে।
কিন্তু দুজনের অবস্থা বা ডাটা নাও মিলতে পারে কারণ দুটিই আলাদা অবজেক্ট।
নিচের চিত্রটির দিকে তাকালে সুবিধা হবে বুঝতে।





আমরা যে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড ডিজাইনটি করলাম,  এখানে Person নামের ক্লাসের ৬টি অবজেক্টের ডাটা আছে।
অর্থাৎ Person একটি ক্লাস বা প্রজাতি হিসেবে চিন্তা করতে পারি এবং অবজেক্টগুলো হচ্ছে সেই প্রজাতির একএকটি সদস্য। সেই সদস্যদের সবার মধ্যেই একই সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে।

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেশন বুঝলে আমরা অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের দিকে এগুতে পারব।

আমরা যখন অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং করব, তখন আমাদের কিছু কাজ আগে করে নিতে হবে।
অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড এনালাইসিস(Object Oriented Analysis or OOA) এবং অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড ডিজাইন(Object Oriented Design or OOD)।

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড এনালাইসিস বোঝাচ্ছে অবজেক্ট খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী ডিজাইনের জন্য প্রস্তুত করা।
ধরি, আমরা এমন একটি সফটওয়্যার বানাতে চাচ্ছি, যেখানে কিছু লোকের ঠিকানা সঠিকভাবে রাখা যাবে।
তাহলে চিন্তা করি, এখানে অবজেক্ট কি কি হতে পারে? লোক আর তাঁর এড্রেস। আর কোন অবজেক্ট চোখে পড়ছে কি? সূক্ষ্মভাবে বেশকয়েকটা অবজেক্টকে চিন্তা করা যায়, কিন্তু আমাদের কাজের জন্য এই দুইটি অবজেক্ট যথেষ্ট। তাই যে যে অবজেক্ট পেলাম তাঁদের  ক্লাসের নামকরণ করি, Person , Address। 
এবার এটি ডিজাইন করি। বুঝতে চেষ্টা করি, আমি ক্লাসগুলোর কি কি বৈশিষ্ট্যকে উপস্থাপন করতে চাই, সে অনুযায়ী ডিজাইন করি। ডিজাইন করলে নিচের চিত্রটির মত দাঁড়ায় -


 এখানে Person, Address নামের দুইটি ক্লাসের দুইটি অবজেক্টের(Person, Address) মধ্যকার সম্পর্ককেও তুলে ধরা হয়েছে, এই ডায়াগ্রামটিকে Class Diagram বলে(Class to Class Relationship)।
ক্লাসের অবজেক্ট ও ডাটাগুলো আসলে কেমন আচরণ করবে তা আমরা ক্লাস ডায়াগ্রাম ডিজাইন দিয়ে ব্যাখ্যা করব। 

এবারে কোন প্রোগ্রামিং ভাষা যেমন জাভা, সি++, পাইথন ইত্যাদি যেইসব ভাষার অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড ফিচার রয়েছে, তাঁদের একটি দিয়ে ডিজাইন অনুযায়ী কোড লিখি। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড ফিচার বলতে, যেসব প্রোগ্রামিং ভাষায়, আমরা একেকটি ক্লাস গঠন করে অবজেক্ট তৈরি করে ডাটা নিতে পারব এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সেসব ভাষা OOP Principles মেনে চলবে।




এই পুরো কাজটাই অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের অংশ ।

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ধারণাটি তুলনামূলক নতুন ধারণা, এর আগে স্ট্রাকচারাল বা প্রসেডিউরাল প্রোগ্রামিং জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু আমরা কেন অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ব্যবহার করব?

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং কনসেপ্টের আগে আমরা ব্যবহার করতাম স্ট্রাকচারাল প্রোগ্রামিং কনসেপ্ট। স্ট্রাকচারাল প্রোগ্রামিংয়ে আমাদেরকে ফাংশনভিত্তিক মেথডে কাজ করতে হয়। সেখানে অবজেক্ট হিসেবে কোনকিছুকে চিন্তা করার সুযোগ নেই। ফলে আধুনিক অ্যাপগুলোর ফিচারভিত্তিক কোডিং করা এখন যতটা সহজ, অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং কনসেপ্ট না থাকলে এতটা সহজ থাকত না।





এছাড়াও অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং প্রিন্সিপলস(OOP Principles) নামে পরিচিত, এই সুবিধাগুলো এই ধারণা প্রবর্তনের আগে পাওয়া যেত না। এখানে সেগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ গুগল, জাভা প্রোগ্রামিং - ডেইটেল এন্ড ডেইটেল
ছবিসূত্রঃ গুগল
ডায়াগ্রামঃ লেখক

পরামর্শ বা প্রশ্নঃ dipchakraborty71@gmail.com

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং-এ ইনহেরিটেন্স

ইনহেরিটেন্সঃ ইনহেরিটেন্স অর্থ উত্তরাধিকারী। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং-এ একটি ক্লাস অন্য আরেকটি ক্লাসকে ইনহেরিট করলে ঐ ক্লাস যে ক্লাসকে ইনহেরিট করেছে, সে ক্লাসের ডেটাগুলো ব্যবহার করতে পারে। উত্তরাধিকারসূত্রে পিতার সম্পত্তিপ্রাপ্তির মতই হয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা! তাই সুবিধার জন্য ইনহেরিট যে ক্লাসকে করা হয়েছে সে ক্লাস প্যারেন্ট ক্লাস ও যে ক্লাস ইনহেরিট করেছে সেই ক্লাস চাইল্ড ক্লাস হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। আমিও এই নামেই ডাকছি। ইনহেরিট করার জন্য আমরা extends কিওয়ার্ডটি ব্যবহার করি। এখানে চাইন্ড ক্লাস প্যারেন্ট ক্লাসকে এক্সটেন্ড করে প্যারেন্ট ক্লাসের মেথডটি এক্সেস করতে পারছে। inheritance এর প্রকারভেদ, সিঙ্গেল লেভেল, মাল্টীলেভেল, হায়ারকিক্যাল, হাইব্রিড। সিঙ্গেল লেভেলঃ একটি প্যারেন্ট ক্লাস ও চাইল্ড ক্লাসের ডিরেক্ট সম্পর্ক।   মাল্টিলেভেলঃ প্যারেন্ট ক্লাস যদি অন্য আরেকটি ক্লাসকে ইনহেরিট করে তবে ঐ ক্লাসের সাথে চাইল্ড ক্লাসের সম্পর্ক। হায়ারকিক্যালঃ এক প্যারেন্টকে একাধিক চাইল্ড ইনহেরিট করলে হাইব্রিডঃ বাকি প্রকারভেদগুলোর মিশ্রণ এখন পর্যন্ত যা দেখলাম, তা আ...

অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং-এ পলিমরফিজম

পলিমরফিজমঃ পলিমরফিজম অর্থ বহুরূপতা। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ে, একই নামে বহু মেথড লেখা যায় অন্তত একটা পার্থক্য রেখে। অথবা প্যারেন্ট ক্লাসের কোন মেথডকে চাইল্ড ক্লাসে আবার লেখা যায়, একে বলে মেথড ওভাররাইড করা। এখানে একই মেথড প্যারামিটার বদলে অনেকবার ব্যবহার করলাম, একে বলে মেথড ওভারলোডিং। এখানে প্যারেন্ট ক্লাসের মেথডকে চাইল্ড ক্লাসে আবার লিখলাম। একে বলে মেথড ওভাররাইড করা। পলিমরফিজমের সুবিধা অনেক। কোড রিইউজ করা যায়, একটা সুপার ক্লাস বানিয়ে সেখানে সব মেথড রেখে, সেটা দিয়েই অন্যান্য সাবক্লাসের কাজ করা যায়, কন্সট্রাক্টরে বিভিন্নভাবে এর কাজ করা যায়। পলিমরফিজমের একটি অসুবিধা হচ্ছে, কোডের readable quality কমিয়ে দেয়। একই নামের অসংখ্য মেথড থাকলে runtime এও প্রভাব ফেলে, ফলে প্রোগ্রাম স্লো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।